![]() |
| মনোলিথ এর ছবি ( গুগল থেকে সংগৃহীত) |
মনোলিথ কি:
মনোলিথকে আমরা এক কথায় একটি শক্ত পাথরের স্তম্ভ বলতে পারি। বর্তমান সময়ে হঠাৎ করেই কিছু বিশাল আকৃতির স্তম্ভ দেখা গিয়েছে। যা অনেকের কাছেই শিল্পীর আকাঁ শিল্প বা তৈরি করা শক্ত স্তম্ভ বলে গুজব উঠেছে। কেউ কেউ ধারনাই করে নিয়েছে যে এগুলো ভিন্ন গ্রহের প্রযুক্তি। যা কি না এলিয়েন দ্বারা পরিচালিত। কিন্তু এগুলো আদৌ কোনো শিল্পীর আকাঁ ছবি বা তৈরি হওয়া শক্ত কাঠামো নয়। কেউ এগুলো কেউ তৈরিও করেনি।হঠাৎ করেই এগুলো ভেসে উঠে এবং হঠাৎ করেই চোখের সামনে থেকে বিলীন হয়ে যায়। যে কারনে সবার মধ্যেই একটা রহস্যঘেরা অবস্থান বিরাজ করছে। বিরাজ করবেই বা না কেন কারন হঠাৎ করেই আবির্ভূত হয় আবার হঠাৎ করেই উধাও হয়ে যায়।
মনোলিথ দেখতে কেমনঃ
![]() |
| তুরস্কের মনোলিথ। ছবিটি গুগল থেকে নেওয়া |
সাধারনত মনোলিত দেখতে অনেকটা চকচকে অ্যালুমিনিয়ামের মতো। যেটা নিয়ে এখনো সন্দিহান রয়েছে। তবে এতটাই উজ্জ্বল ছিলো যে যাকে অ্যালুমিনিয়াম বললে ভূলও হবে না। এটা আকৃতিতে ঘনবস্তু রকমের, লম্বায় ১০ ফিট বা তারও বেশি, প্রস্থও মোটামুটি ভালোই।
মনোলিথ আবিস্কৃত হওয়ার স্থান এবং সময়ঃ
যদি বলি সর্বপ্রথম মনোলিথ নামক এক চাঞ্চল্যকর বস্তুর আবিস্কার কোথায় হয়েছে তাহলে বলতে হয় আমেরিকার উটাহ নামক এক প্রদেশে দিনটি ছিলো ১৮ নভেম্বর ২০২০।তারপর ইউরোপ এবং আমেরিকার কিছু পর্বতে হঠাৎ করেই এই বস্তুর আবিস্কার হয়। যা দেখেই জনগনের মধ্যে একটা চাঞ্চল্যকর অবস্থা তৈরি হয়। ২৬ নভেম্বর ২০২০ সালের রাতে ইউরোপের রোমানিয়া পর্বতে তিন কোণা বিশিষ্ট ১০/১২ ফিটের একটি চকচকে ধাতব বস্তু হুট করেই চোখে পড়ে সবার। সবাই ধারনা করে এই মনোলিথটিতে গ্রাফিতি করা ছিলো। সবাই হকচকিয়ে যায়, তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো এই মনোলিথটা উধাও হলো ঠিকই কিন্তু তুরস্কের সানলিউরফা নামক প্রদেশে যা কি না ছিলো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট অব তুরষ্ক" সেখানে ১০ ফিট উচ্চতাবিশিষ্ট মনোলিথ আবার ভেসে উঠে। ধারনা করা হয় এটাই ইউরোপের রোমানিয়া পর্বতের সেই মনোলিথটাই যা ভিন্ন জায়গায় ভেসে উঠছে। বার্তা সংস্থা এপি জানায় কোনো এক কৃষক প্রথমে এই মনোলিথটাকে দেখতে পায় এবং পরে তিনি সবাইকে জানায়।মানুষের তান্ডবে প্রশাসন জায়গাটিকে নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে ঘিরে রাখে।
শুধু তাই নয় মনোলিথটি গাড়ি পার্কিং,রেস্তোরাঁ বা মল গুলোর পাশেও দেখা গিয়েছে। ধীরে ধীরে নেদারল্যান্ড,জার্মানী,কানাডা,নেভাডা,ইতালী সহ বিভিন্ন দেশে দেখা মিলে এই বস্তুটির। শুধুমাত্র আমেরিকার উটাহ প্রদেশ এবং রোমানিয়ার মনোলিথ একই রকম ছিলো আর বাকি গুলোর মধ্যে কোনো মিল ছিলো না। দিন যতই ঘনিয়ে যেতে লাগলো বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি প্রেমীদের মধ্যে একটা কৌতূহল লক্ষ্য করা গেল। তাদের মনে প্রশ্ন এলো
এটা কি?
কেনই বা উদ্ভব হলো কেনই বা মিলিয়ে গেল?
কৌতূহলের কোনো শেষ নেই। এ যেন এক কৌতূহলের চূড়া।
মনোলিথকে নিয়ে এক কিশোরঃ
দক্ষিন ইংল্যান্ডের উপকূলের "আইল অব উইট" এর ২৯ বছর বয়সি বাসিন্দা টম ডানফোর্ড। যে কিনা মনোলিথ এর ঘটনায় অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেই একটা মনোলিথ বানিয়ে মানুষকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। ঘটনাটা ছিলো এমন কোনো বিকেলে টম তার কু কুরটিকে নিয়ে রাস্তার ধারে দেখতে পায় একটি মনোলিথ। সাথে সাথেই তিনি সবাইকে জানায় বিষয়টি। বরাবরের মতো সাংবাদিক,মিডিয়াকর্মীরা চলে আসে ঘটনাটি জানতে। কিন্তু গল্প গল্পই থেকে গেল আর সত্যিটা বের হয়ে এল। টমের ভাষ্যমতে তিনি সাংবাদিকদের জানায় বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন জায়গায় এই মনোলিথ দেখে তার নিজেরও এরকম একটা বানানোর ইচ্ছে হয়। তার ধারনা এমনটা ছিলো যে, যদি সেটা দেখার জন্য ভিন গ্রহের প্রাণীরা আসে পৃথিবীতে তাহলে আইল অব উইট এও আসবে। টম আরো চিন্তা করে যাতে এটাকে কেউ চুরি করে নিয়ে যায় কিন্তু সেটা হয় নি। পেশায় ডিজাইনার টম এমন ভাবে এটিকে বানায়। ততক্ষন পর্যন্ত এটি মানুষ বিশ্বাসই করতে পারতেছিলো না যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ নিশ্চিত ছিলো না এটি মানুষের তৈরি। যেকারনে বুঝার কোনো সুযোগই ছিলো না যে এটি টম নিজে বানিয়েছে। এইভাবে দুইদিন টম এটাকে রাখলো এবং সবাই খুব শখ করে সেলফি নিলো এটার সাথে।দুইদিন পর টম এটাকে নিজেই সরিয়ে নিলো।
অবশেষে রহস্য উৎঘাটন হলোঃ
"দ্য মোস্ট ফেমাস আর্টিস্ট" নামের এ শিল্পীগোষ্ঠীরাই এটার প্রস্তুতকারক। ধারনা করা হয় উটাহ এবং তুরস্কের মনোলিথ দুটি ৩৪ হাজার ডলারে বিক্রি হয়েছে।
একই ঘটনা দেখা যায় ভারতের এক পার্কে তারা জানায় পার্কের সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং আকর্ষনীয় করতে তারা ৭ ফুটের একটা মনোলিথ বানায়। এ যেন এক মন ভাঙ্গা গল্প এতকিছু ভাবার পরে যদি শুনি যে এগুলো মানুষই বানিয়েছে। শুধু তাই নয় মনোলিথ বানাচ্ছে যারা হয়তো তারাই সরিয়ে নিচ্ছে অথবা কেউ নিয়ে যাচ্ছে। তবে এখানে একটু উল্লেখ করা ভালো যে, সেই দলেরই একজন সদস্য ম্যাটি মো। তিনি জানায় যে মনোলিথ তাদের আয়ত্তের বাহিরে। তারা এটা বানানোর কল্পনাও করতে পারে না। যদিও তার কথায় কোনো সিরিয়াসনেস ছিলো না। কিন্তু এত কৃত্রিম ঘটনার মধ্যেও একটি চরম সত্য খোঁজে পাওয়া যায় তা হলো, নেদারল্যান্ড,জার্মানী,ইতালী,রুশ,রোম,চেক প্রজাতন্ত্র ইত্যাদি জায়গাতে এতগুলো মনোলিথ পাওয়া গেল এগুলোর মধ্যে একটিও কি এলিয়েনদের তৈরি না। এই প্রশ্নটি হলে এলিয়েনপ্রেমীদের। আপাতত এতটুকুই এর আপডেট পাওয়া সম্ভব হয়েছে।
তবে যাই হোক আশা করা যায় এর সত্যটি উঠে আসবেই। কারন সত্য নামক রশ্মি মানুষ কখনোই ঢেকে রাখতে পারে না। সে পর্যন্ত নজর রাখি।




মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন