প্রথমেই শুনে অবাক হলেন তাই তোহ্;
আর অবাক হওয়ারই কথা, চারটা বর্ণদিয়ে তোহ্ সব কিছু বোঝা সম্ভব নয় যদিও আমরা পন্ডিত। তাহলে দেখা যাক চার বর্ণের ভেতর লুকিয়ে থাকা আকাশ সমান কিছুকথা।
এইতো সেদিন,
পাশের বাসার একটা দিদির বিয়ে হলো। বর নাকি সরকারি চাকুরিজীবী, বুঝতে আর হয়তো
বাকি রইলো নাহ্ বরের কদর টা। কি ধুমধামেই নাহ্ বিবাহটা সম্পন্ন হলো।
যাক ভালো হয়েছে ;সুপাত্রে কন্যা দান করা হয়েছে।
বিয়ের কিছুদিন আগেও পাড়ার সবাই বলাবলি করতে লাগলো যে, অমুকের মেয়েটা নাকি প্রেম , ভালোবাসা করে। সবাই জানতো এবং বলতোও মেয়েটা (দিদি) নাকি কাউকে ভালোবাসে । হ্যা সত্যিই ভালোবাসে , কারন কথায় আছে যাহা বটে তাহাই রটে।
কিন্তু বিয়ে হলো , সরকারি একজন চাকুরিজীবীর সাথে।এতদিনের প্রেম , ভালোবাসা জলাঞ্জলি দিয়ে এই ভােব চলে যাওয়াটা কি ঠিক হলো দিদির? হয়তো সেই বলতে পারবে। শুনেছিলাম তাদের এই সম্পর্টা আট বছর আগে শুরু হয়। যেটা সত্যিই ভাবনার বিষয়;আজকাল তোহ্ দিনে দুই তিনটা বিচ্ছেদ হওয়া সাধারন বিষয়।এই সম্পর্ক ভাঙ্গার শহরে ৮ বছর হলো ৮ যুগ।এখন তো এমনই হয় যে সকালে রিলেশন শুরু হয় সন্ধ্যায় শেষ হয়।কিন্তু তাই বলে যে দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক হয় না এমন না। পথিকৃৎটা আমরা দিদির ক্ষেত্রেই দেখতে পায়। জানতে পারি দিদি আর উনার(দিদির প্রিয় মানুষটির) বয়সের পার্থক্য নাকি ৩ বছর। যখনই দিদি অনার্স শেষ করলো তখন তার বয়স হলো ২৫, আর এসময়ে ২৫ মানে অনেক । সেজন্য দিদির বাসা থেকে প্রায়ই বিয়ের কথা শুনতে হতো ,যদিও দিদি বলেছিলো অনার্সটা শেষ করেই বিয়ে করবে যাতে এই সময়ের মধ্যে তার কাছের মানুষটি কিছু একটা করতে পারে। কিন্তু সেটা আর মনে হয় হবে নাহ্;কারন গ্রামের মানুষজনও দিদিকে নিয়ে চর্চা করতে লাগলো ।করবেই বা না কেন আমরা তোহ্ কেউ কারো ভালো দেখতে পারি না। এ ওর পিছনে ও এর পিছনে লেগেই থাকি , না করতে পারি নিজে উন্নতি না অপরকে করতে দিই ।এরকম কিছুমানুষের জন্য সমাজ আমরা পিছিয়ে যায় । দিদিরও ইচ্ছে ছিলো লেখাপড়া করে কিছু একটা করবে ;কিন্তু বাবা ,মা,পরিবারের কারনে সেটাও হয়তো অসম্ভব হয়ে পড়ে। বাবা মা পরিবার চিন্তা করে সমাজের কথা, ভাবে সমাজ কি বলবে। কিন্তু তারা এটা চিন্তা করে না মেয়েটা আমার। কেন মানুষের কথায় মেয়েটার স্বপ্ন বিনষ্ট করি। এদিকে তার মানুষটিও চাকুরির বাজরে নাজেহাল অবস্থার শিকার। তার অবস্থানও বেকার ।যে কারনে সে দিদির পরিবারের বলতেও পারছে নাহ্।এক পর্যায়ে তারা দুজননই সিদ্ধান্ত নেয় তাদের দুজনকেই কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। দুজন দুজনকে পেতে হলে কিছু একটা করতে হবেই। শুরু হয়ে যায় জীবন যুদ্ধ।ছেলেটি দিদির সাথেে কথা বলা বাদই দিয়েছে কেননা তার দরকার একটা চাকুরি। কারন চাকুরি না করলে হয়তা তার প্রিয় মানুষটিকে হারাতে হবে ;কিন্তু সে এটা চায় নাহ্।
চলে গেল দুই বছর দিদির বয়স তখন ২৭ ছেলেটি ৩০ এ। এই দুই বছর তাদের মাঝে কথা হয় নাই বললেই চলে। কিন্তু তাদের মধ্যে ছিলো অগাৎ বিশ্বাস এবং অতল ভালোবাসা। তাই তারা দুজন সব কিছু একদিকে রেখে অন্যদিকে শুধু পড়াশোনা রেখেছে। দুইটি বছর কেটে গেলেও কেউ কাউকে ভূলতে পারে নি। কিন্তু দিদিকে শুনতে হয়েছে অনেক কথা।যা তিনি দাঁত দাঁত রেখে শক্ত ছিলো।
শত বাাঁধা বিপত্তির পরও দিদি তখনও থেমে থাকেনি। চিন্তা তখন একটাই কিছু করতে হবে।এক পর্যায়ে ছেলেটি একটা সরকারী চাকুরীতে যোগদান করলো। দিদিও একটা চাকুরি পেল। এখন তাদেরকে আর কে আটকায়। দীর্ঘ আট বছর প্রতীক্ষার পর ছেলেটি দিদির বাসায় প্রস্তাব রাখে এবং প্রজাপতির পাখায় সিঁদূর লাগানো হয়ে যায় খুব ধুমধাম করেই বিবাহ সম্পন্ন হলো ।কি কিছু বুঝতে পারলেন? হ্যা ঠিকই ধরতে পেরেছেন, মেয়েটি অন্যকাউকে নয়, তার ভালোবাসার মানুষটিকেই বিয়ে করেন। দুইটি বছর কথা না হওয়ার পরও তারা কেউ কাউকে ভূলে যায় নি। তাদের মধ্যে বনিবনা ছিলো অনেক বেশি। মন থেকে চাইলে সম্ভব তা হয়তো গল্পটি পড়েই কিছুটা বুঝতে পারলেন। তার জন্য দরকার সত্যিকারের ভালোবাসা এবং আত্মবিশ্বাস। যেটি গল্পের দুইটি চরিত্রের মধ্যে পাওয়া যায়। দূরের মানুষটিকেও কাছে পাওয়া যায়। যার মাধ্যম বই। কারন ছেলেটি জানতো এখন সময় বউয়ের পিছনে নয়; সময় দিতে হবে বইয়ের পিছনে। যার মাধ্যমে বউকে পাওয়া যাবে। আমরাও এটাই বেশি করি যখন যেটার দরকার সেটা তখন না করে অন্যকিছু করি এবং পরে আফসোস করি।
এজন্য বলি “ভালো বই পড়লে ভালো বউ পাওয়া যায়”
(সংক্ষেপিত)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন